ঢাকা অফিস: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আজ। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হবে। নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি এবং ইসির নিবন্ধিত ১৬টি রাজনৈতিক দলসহ অর্ধশতাধিক রাজনৈতিক দল নির্বাচনের বাইরে রয়েছে। দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো দ্বাদশ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। গতকাল শনি ও আজ রোববার তারা সারা দেশে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ পালনের ঘোষণা করেছে। নওগাঁ—২ আসনে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে ওই আসনে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। ফলে ৩০০ আসনের মধ্যে ভোটগ্রহণ করা হবে ২৯৯ আসনে। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী এবার ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪২ হাজার এবং ব্যুথ ২ লাখ ৬২ হাজার। ভোটারের সংখ্যা ১১ কোটি ৯৬ লাখ। পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৭৬ লাখ ৯ হাজার ৭৪১ জন এবং নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৮ হাজার ৬৯৯ জন। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৯৭১ প্রার্থী। ৩ হাজার নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েক লাখ সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন। সেনাবাহিনীর সদস্যরা নির্বাচনী কাজে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করবে। ইসি জানিয়েছে, নির্বাচন পর্যবেক্ষণে দেশি ২৩০০ এবং বিদেশি ২০০ জন পর্যবেক্ষক কাজ করবেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নির্বাচনে ১০ হাজার ৫৩০টি ভোটকেন্দ্রকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তবে ইসির সূত্র জানায়, তারা ১০ হাজার ৩০০টি কেন্দ্রকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
নির্বাচন ঘিরে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি বিরাজমান। বিএনপিসহ নির্বাচন বর্জন করা দলগুলো হরতাল কর্মসূচি পালন করছে। এর মধ্যে রেলের বগিতে অগ্নিকা—, দেশের বিভিন্ন স্থানে ভোটকেন্দ্রে ককটেল বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া গেছে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী দাঁড় করানোসহ নানা কৌশল নিয়েছে। এক—তৃতীয়াংশ আসনে আওয়ামী লীগের এই স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলার আভাস দিয়েছেন। ফলে প্রায় শতাধিক আসনে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। অনেক স্থানে নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় প্রার্থীরা একে অন্যকে দোষারোপ করছেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহল থেকে বারবার অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচনের তাগিদ দেওয়া হলেও বিএনপিসহ ইসির নিবন্ধিত ১৬টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনের বাইরে রয়েছে। তরে এবার সরকারি দল আওয়ামী লীগসহ ২৮টি রাজনৈতিক দল অংশ নিচ্ছে।
বিরোধপূর্ণ রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা হবে। ভোট নিয়ে উচ্ছ্বাসের পাশাপাশি উদ্বেগ—উৎকণ্ঠারও কমতি নেই। দেশের বিভিন্ন স্থানে ইতোমধ্যেই নির্বাচনী সহিংসতায় কমপক্ষে পাঁচজনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। গত ২০১৮ সালের মতো নির্বাচনে বিতর্ক এড়াতে এবারই প্রথমবারের মতো সংসদ নির্বাচনে ভোটের দিন সকালে ভোটকেন্দ্রে ব্যালট পেপার পাঠাচ্ছে ইসি। নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ইতোমধ্যে সারাদেশে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসি কর্তৃক প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুযায়ী, দেশে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৮৯ হাজার ২৮৯ জন। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে কমিশন এ তালিকা প্রকাশ করে। দেশে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ছয় কোটি ৭৬ লাখ নয় হাজার ৭৪১ জন এবং নারী ভোটারের সংখ্যা পাঁচ কোটি ৮৯ লাখ ১৮ হাজার ৬৯৯ জন। এছাড়া সারা দেশে এবার তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার আছেন ৮৪৯ জন। এবারের নির্বাচনে মোট ৪২ হাজার ২৪টি কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে অপেক্ষাকৃত দুর্গম ২ হাজার ৯৬৪ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণের আগের দিন গতকাল শনিবার ব্যালট পেপার পাঠানো হয়েছে। আজ ভোটের দিন সকালে ৩৯ হাজার ৬১ কেন্দ্রে ব্যালট পেপার যাবে। ব্যালট পেপার পরিবহন ও বিতরণে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর আনসার—ভিডিপি, র্যাব, বিজিবি সব মিলিয়ে সাড়ে ৭ লাখ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মাঠে আছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রায় ৩ হাজার ম্যাজিস্ট্রেট ও জজ মাঠে দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরাও মাঠে রয়েছেন। এছাড়া আরো ১ লাখ স্ট্যান্ডবাইসহ ৯ লাখ জনবল প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এখন কেবল ভোটের জন্য অপেক্ষা। গত শুক্রবার সকাল ৮টায় শেষ হয়েছে প্রার্থীদের আনুষ্ঠানিক প্রচার—প্রচারণা। তারপরও নানাভাবে অনানুষ্ঠানিক প্রচারণা এবং পোলিং এজেন্ট চূড়ান্ত করার কাজে ব্যস্ত রয়েছেন প্রার্থীরা। নির্বাচন উপলক্ষে অনভিপ্রেত পরিস্থিতি এড়াতে ভোটকেন্দ্র, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এবং ভবনের নিরাপত্তা জোরদার ও নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, প্রায় ৮ লাখ সরকারি কর্মকর্তা—কর্মচারী ভোটগ্রহণ করবেন। আরো ১ লাখ স্ট্যান্ডবাই থাকবেন। আমাদের ৯ লাখ জনবল প্রস্তুত আছে। আর আনসার—ভিডিপি, র্যাব, বিজিবি সব মিলিয়ে সাড়ে ৮ লাখ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মাঠে আছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রায় ৩ হাজার ম্যাজিস্ট্রেট ও জাজেস মাঠে আছেন। পাশাপাশি বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরাও মাঠে রয়েছেন। গত ১৫ নভেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সিইসি ৩০০ আসনের তফসিল ঘোষণা করেন। পরে এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে নওগাঁ—২ আসনের ভোট স্থগিত করা হয়। ভোট হবে ২৯৯ আসনে।
এদিকে বিএনপিসহ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। শনিবার ও রোববার সারা দেশে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচি পালন করছে। গতকাল রাত থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে ভোটকেন্দ্রে ককটেল বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া গেছে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী দাঁড় করানোসহ নানা কৌশল নিয়েছে। এক—তৃতীয়াংশ আসনে আওয়ামী লীগের এই স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলার আভাস দিয়েছেন। ফলে প্রায় শতাধিক আসনে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। অনেক স্থানে নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় প্রার্থীরা একে অন্যকে দোষারোপ করছেন।
নির্বাচন কমিশন এবং সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি থাকলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক এবং গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করা যাবে। নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নে গতকাল ঢাকায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘নির্বাচনটা হতে দেন। গ্রহণযোগ্যতা পাবে কি না, সেটা বিদেশিরাই বলবেন’।
মোটরসাইকেল নিষেধাজ্ঞা : নির্বাচন উপলক্ষে ৭২ ঘণ্টা মোটরসাইকেল চলাচলের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এ সময় কেবল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী, প্রশাসনের সদস্য ও অনুমোদিত পর্যবেক্ষক, জরুরি সেবার যানবাহন, ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং সংবাদপত্র বহনকারী সব ধরনের যানবাহন (মোটরসাইকেলসহ), দূরপাল্লার যানবাহন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তাদের এজেন্টদের ক্ষেত্রে এই বিধিনিষেধ শিথিল থাকবে। সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক, নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা—কর্মচারী, জাতীয় মহাসড়ক, প্রধান আন্তঃজেলা রুট, মহাসড়ক এবং প্রধান মহাসড়কের সংযোগ সড়কের ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ শিথিল থাকবে।
কেন্দ্রে সকালে ব্যালট পেপার : এবারের নির্বাচনে মোট ৪২ হাজার ২৪টি কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে অপেক্ষাকৃত দুর্গম ২ হাজার ৯৬৪ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণের আগের দিন শনিবার ব্যালট পেপার পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এছাড়া ভোটের দিন সকালে ৩৯ হাজার ৬১ কেন্দ্রে ব্যালট পেপার যাবে। ব্যালট পেপার পরিবহন ও বিতরণে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২২ সদস্যের মনিটরিং সেল : আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে ২২ সদস্যের মনিটরিং সেল গঠন করেছে কমিশন। এই মনিটরিং সেলের নেতৃত্ব দেবেন আইডিএ প্রকল্প—২ এর প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মদ সায়েম। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী, মনিটরিং সেল আজ শনিবার সকাল ৮টা থেকে ৯ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত মোট ৭২ ঘণ্টা পরিচালনা করা হবে। দায়িত্বরত কর্মকর্তারা বিভিন্ন উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করে মাঠপর্যায়ে যথাসম্ভব যাচাই—বাছাই করা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনকে অবহিতকরণ এবং জরুরি প্রয়োজনে বিশেষ প্রতিবেদন পাঠাবেন।
ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা : নির্বাচন উপলক্ষে অনভিপ্রেত পরিস্থিতি এড়াতে ভোটকেন্দ্র, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এবং ভবনের নিরাপত্তা জোরদার ও নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে ইসি। গত শুক্রবার ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান নির্দেশনাটি সব রিটার্নিং কর্মকর্তাদের পাঠিয়েছেন।
৮ লাখ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাঠে : নির্বাচনে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রায় ৮ লাখ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫ লাখ ১৭ হাজার ১৪৩ জন আনসার সদস্য। বাকিদের মধ্যে রয়েছে বিজিবি, র্যাব, পুলিশ, কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী। ইতোমধ্যেই গত ৩ জানুয়ারি থেকে ভোটের মাঠে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট আট দিন মাঠে থাকবেন তারা। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে আগামী ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র বহন ও প্রদর্শনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এ সময় পর্যন্ত লাইসেন্সধারীরাও আগ্নেয়াস্ত্র বহন করতে পারবেন না।
৩ হাজার নির্বাহী—বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট : নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আট বিভাগে ২ হাজারেরও বেশি এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত রয়েছেন। বিভিন্ন অপরাধের বিচার সম্পন্ন করতে গতকাল শুক্রবার থেকে মাঠে নেমেছেন আরো ৬৫৩ জন বিচারিক হাকিম। বিচারিক হাকিমরা ভোটের আগে—পরে পাঁচ দিন দায়িত্ব পালন করবেন। সবমিলিয়ে প্রায় ৩ হাজার জুডিশিয়াল ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। এর আগে সারা দেশে ৩০০ আসনের জন্য ৩০০টি নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়। তারা বিভিন্ন অপরাধে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের রেকর্ড সংখ্যক শোকজ, তলব ও জরিমানা করেন। এসব কমিটির সুপারিশে নিয়মিত আদালতে অন্তত অর্ধশতাধিক প্রার্থী ও তাদের সমর্থকের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত দিয়েছে।
১৮৬ বিদেশি পর্যবেক্ষক : নির্বাচন দেখার জন্য যে বিদেশিরা আবেদন জানিয়েছিলেন তাদের মধ্যে ১৮৬ জন পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তাদের মধ্যে ১২৭ জন পর্যবেক্ষক আর ৫৯ জন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের কর্মী। এছাড়া নির্বাচন দেখতে দেশি ২০ হাজার ৭৭৩ জন পর্যবেক্ষককে অনুমোদন দিয়েছে ইসি। তাদের মধ্যে কেন্দ্রীয়ভাবে ৪০টি পর্যবেক্ষক সংস্থার ৫১৭ জন এবং স্থানীয়ভাবে ৮৪টি পর্যবেক্ষণ সংস্থার ২০২৫৬ জন ভোট পর্যবেক্ষণ করবে।
অ্যাপে ভোটার নম্বর : ভোটার, প্রার্থী ও নাগরিকদের বিভিন্ন তথ্যের নিশ্চয়তা দিতে ‘স্মার্ট ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট বিডি’ নামের একটি অ্যাপ চালু করেছে ইসি। এতে ভোটার নম্বর, কেন্দ্রের নাম ও লোকেশন, ভোট পড়ার হার, প্রার্থীদের হলফনামাসহ নির্বাচনের বিভিন্ন তুলনামূলক চিত্র ঘরে বসেই জেনে নিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, স্মার্ট ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট বিডি নামের যে অ্যাপ সম্প্রতি আমরা উদ্বোধন করেছিলাম, সেখানে কেন্দ্রভিত্তিক দুই ঘণ্টা পরপর ভোট পড়ার হার জানা যাবে।
এর মধ্যে ঢাকা অঞ্চলে সর্বোচ্চ ১৩১টি এবং সিলেট অঞ্চলে সর্বনিম্ন ২১টি নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশের জবাবে এ পর্যন্ত ৩৮৪ প্রার্থী ও তাদের সমর্থক অনুসন্ধান কমিটির কাছে সরাসরি অথবা প্রতিনিধির মাধ্যমে লিখিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন। ৬২টি জেলায় নিয়োজিত থাকছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সমতলে সীমান্তবর্তী ৪৫টি উপজেলায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিজিবিকে। এছাড়া সেনাবাহিনী সীমান্তবর্তী ৪৭টি উপজেলায় বিজিবির সঙ্গে এবং উপকূলীয় চার উপজেলায় কোস্টগার্ডের সঙ্গে সমন্বয় করে যৌথভাবে দায়িত্ব পালন করবে। বিমানবাহিনী দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলের ভোটকেন্দ্রে প্রয়োজনীয় হেলিকপ্টার সহায়তা দেবে। এছাড়া জরুরি প্রয়োজনে নির্বাচনী সহায়তা প্রদানে বিমানবাহিনীর প্রয়োজনীয় সংখ্যক হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে যৌথ সমন্বয় সেল স্থাপন করা হয়েছে।
Leave a Reply